প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: '১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ব্রাসেলসে ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবর দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে আর থাকা হয়নি তাদের। চলে যেতে হয় জার্মানির বন শহরে। রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বাসায় তাদের থাকার ব্যবস্থা হয়। বঙ্গবন্ধু সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনও সেদিন সেখানে উপস্থিত হন। তিনি দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে সান্ত্বনা দিলেন।'
-শেখ হাসিনা এবং তার স্বামী ওয়াজেদ মিয়াও কামাল হোসেনকে অনুরোধ করেছিলেন একটি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশে সংঘটিত ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। একইসঙ্গে তারা যে বন্দি জীবনযাপন করছেন না, সংবাদ সম্মেলন থেকে সেটাও জানাতে বলেন তারা। কিন্তু তিনি (ড. কামাল হোসেন) থাকতে পারলেন না সেই সংবাদ সম্মেলনে। দিলেন না কোনও বিবৃতি। চলে গেলেন লন্ডনে। 'ড. কামাল কেন রাজি হলেন না, অনুরোধ রাখলেন না, তা তখন সেখানে উপস্থিত কাউকেই তিনি বলেননি।'
কেন সংবাদ সম্মেলন জরুরি ছিল
/ ড. কামাল হোসেন /
স্থান ঠিক করেছিলেন অনিল দাশগুপ্ত
-এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বক্তব্য পাওয়া যায়। ২০১৪ সালে এসে চোখের জলে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন স্মরণ করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'জার্মানিতে নিযুক্ত তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সরকারি কর্মকর্তা হয়েও সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু আব্বার পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ড. কামাল) বিদেশে ছিলেন। তার কোনও সহায়তা পাওয়া যায়নি। একটা বিবৃতি দিতে অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হননি।'
কেন তিনি এমন করেছিলেন?
-অনিল দাশগুপ্তকে রাষ্ট্রদূত চৌধুরী আরও বলেছিলেন, ড. কামাল হোসেন দুপুরের আগেই লন্ডন রওনা হবেন। তার আগেই এই সংবাদ সম্মেলনটি হলে ভালো হয়। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, কামাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন এবং কথা বলবেন।
শেখ হাসিনার 'অনুরোধ রাখেননি' -সেদিন ড. কামাল হোসেন
সম্মেলনটি না হওয়ায় অনিল দাশগুপ্ত ও গিজেলা বনকে সেদিন খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। অনিল দাশগুপ্ত পরবর্তী সময়ে এই লেখককে বলেন, 'সেদিন সেই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হলে তা হতো বহির্বিশ্ব থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ।'
'রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী পরে অনিল দাশগুপ্তকে জানান, তিনি চেষ্টা করেও ড. কামালকে সংবাদ সম্মেলনে পাঠাতে বিফল হন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন কেন এমন করেছিলেন বলতে গিয়ে অনিল দাশগুপ্ত লেখক সরাফ আহমেদকে বলেন, 'আমি ঠিক জানি না। কিন্তু এমনও হতে পারে যে তিনি শেখ হাসিনা ও রেহানার অবস্থানের বিষয়ে কথা বলতে চাননি।'